
কষ্টে ছিল শীর্ষে, ফলাফলে ব্যর্থ: এসএসসি শিক্ষার্থীর নিঃশব্দ সংগ্রাম শেষ হলো হৃদয়ভাঙা ব্যথায়
নাটোরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করতো ১৬ বছরের রুহুল আমিন। বাবা একজন দিনমজুর, মা গৃহিণী। তিন বেলা খাবারের নিশ্চয়তা ছিল না, কিন্তু রুহুলের চোখে ছিল একটি স্বপ্ন—এসএসসি পাস করে শিক্ষক হবে। সবার মতো নয়, রুহুলের পড়ার টেবিল ছিল না, ছিল না বিদ্যুৎ। কেরোসিনের আলোয় রাতভর পড়ে সে প্রস্তুতি নিয়েছিল পরীক্ষার জন্য।
স্কুলের শিক্ষকরা বলতেন, “ছেলেটা অনেক মেধাবী, শুধু দরকার একটু সহায়তা।” সহপাঠীরা জানতো, রুহুল সব বিষয়ে সাহায্য করতো, কিন্তু নিজের জন্য কখনও কিছু চায়নি। পরীক্ষার আগের দিনও সে স্থানীয় বাজারে কাজ করে পরিবারকে চাল এনে দিয়েছিল।
তবে SSC ফল প্রকাশের দিন বদলে দিল সবকিছু। রুহুল ফেল করেছে—মাত্র ৩ নম্বরের জন্য এক বিষয়ে কাটা পড়েছে সে।
ফলাফল শুনে সে কিছু বলেনি, শুধু চুপ করে ঘরে ঢুকে গেছে। পরে জানাজানি হয়, সারা রাত সে কিছু খায়নি। মা কাঁদছিলেন, বলছিলেন, “আমার ছেলে তো কত কষ্ট করেছে, আল্লাহ তাকেই কষ্ট দিল?”গ্রামের শিক্ষকরা বলছেন, প্রশ্নের উত্তর সে ঠিকই জানতো। হয়তো ভুল কোথাও হয়েছে। কিন্তু গরিবের কণ্ঠ কে শুনবে?
রুহুল এখন ঘরের কোণে চুপচাপ বসে থাকে। বন্ধুরা তাকে ডাকে না, সে যায়ও না। তার চোখে শুধু হতাশা আর একরাশ নিরব কান্না।এই সমাজে যেখানে ভালো ফলের পেছনে থাকে কোচিং, গাইড বই, এবং নানা রকম সুযোগ, সেখানে একজন রুহুলের লড়াই ছিল নিজের সাথেই।
কষ্টে শীর্ষে থাকলেও, ফলাফল তাকে দিলো না প্রাপ্য সম্মান। তার নিঃশব্দ সংগ্রাম শেষ হলো এক হৃদয়ভাঙা পরাজয়ে।—
আপনি চাইলে এই প্রতিবেদনে আরেকটু মানবিক গল্প বা স্থানীয় কোনো চরিত্র সংযোজন করতে পারি।